কুরআন-সুন্নাহের আলোকে কুরবানিঃ=মুফতি কাজী মনসুর

 কুরআন-সুন্নাহের আলোকে কুরবানিঃ=মুফতি কাজী মনসুর


♥কুরআন-সুন্নাহের আলোকে কুরবানী♥


আগামী বুধবার পবিত্র ঈদুল আযহা। এই ঈদে  একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হল, কুরবানী। সামর্থ্যবান নর-নারীর উপর কুরবানী ওয়াজিব।  
সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি এই ইবাদত পালন করে না, তার ব্যাপারে হাদীস শরীফে কঠোর ধমকি এসেছে,
عن أبي هريرة قال : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : من وجد سعة لأن يضحي فلم يضح فلا يقربن مصلانا.‎
হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ​সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘যার কুরবানীর সামর্থ্য আছে তবুও সে কুরবানী করলনা সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে।’ (মুসনাদে আহমদ ২/৩২১; মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদীস : ৭৬৩৯; আত্তারগীব ওয়াত্তারহীব ২/১৫৫)

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-
فصل لربك وانحر‎
 (তরজমা) অতএব আপনি আপনার রবের উদ্দেশ্যে নামায পড়ুন এবং কুরবানী আদায় করুন।

♦অন্য আয়াতে এসেছে-
قل ان صلاتى ونسكى ومحياى ومماتى لله رب العالمين.‎
 (তরজমা) (হে রাসূল!) আপনি বলুন, আমার নামায, আমার কুরবানী, আমার জীবন, আমার মরণ (অর্থাৎআমার সবকিছু) আল্লাহ রাববুল আলামীনের জন্যউৎসর্গিত। (সূরা আনআম : ১৬২)
পশু জবাই করে কুরবানী করার মধ্যে এই হিকমত ওছবকও আছে যে, আল্লাহর মুহববতে নিজের সকলঅবৈধ চাহিদা ও পশুত্বকে কুরবানী করা এবং ত্যাগকরা। সুতরাং কুরবানী থেকে কুপ্রবৃত্তির দমনেরজযবা গ্রহণ করা উচিত। তাই কুরবানীর মধ্যেইবাদতের মূল বিষয় তো আছেই, সেই সাথেতাকওয়ার অনুশীলনও রয়েছে।

♦আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-
لن ينال الله لحومها ولا دمائها ولكن يناله التقوى منكم‎
 (তরজমা) (মনে রেখো, কুরবানীর জন্তুর) গোশতঅথবা রক্ত আল্লাহর কাছে কখনোই  পৌঁছে না; বরংতাঁর কাছে কেবলমাত্র তোমাদের পরহেযগারিইপৌঁছে। (সূরা হজ্ব : ৩৭)

عن عائشة رضي الله تعالى عنها أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال : ما عمل آدمي من عمل يوم النحر أحب إلى الله من إهراق الدم، إنه ليأتي يوم القيامة بقرونها وأشعارها وأظلافها، وإن الدم ليقع من الله بمكان قبل أن يقع من الأرض، فطيبوا بها نفسا.‎
উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ​সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, কুরবানীর দিনের আমলসমূহের মধ্য থেকে পশুকুরবানী করার চেয়ে কোনো আমল আল্লাহ তাআলারনিকট অধিক প্রিয় নয়। কিয়ামতের দিন এই কুরবানীকে তার শিং, পশম ও ক্ষুরসহ উপস্থিত করা হবে। আর কুরবানীর রক্ত জমিনে পড়ার আগেই আল্লাহ তাআলার নিকট কবুল হয়ে যায়। সুতরাং তোমরা সন্তুষ্টচিত্তে কুরবানী কর। (জামে তিরমিযী, হাদীস : ১৪৯৩)

ইবাদতের মূলকথা হল আল্লাহ তাআলার আনুগত্যএবং তাঁর সন্তুষ্টি অর্জন। তাই যেকোনো ইবাদতের পূর্ণতার জন্য দুটি বিষয় জরুরি। ইখলাস তথা একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে পালন করা এবং শরীয়তের নির্দেশনা মোতাবেক সম্পাদন করা। আল্লাহ আমাদেরকে তাউফিক দান করুন। আমিন।

Post a Comment

Previous Post Next Post